তাকওয়া ও মুত্তাকী
মহান রবের দরবারে হাজারো কোটি শুকরিয়া, যিনি ‘তাকওয়া ও মুত্তাকী’ নামক বইটি লেখার সুযোগ দিয়েছেন।
رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ.
এ বিষয়ের ওপর আল কুরআনের আয়াতগুলো সংগ্রহ করছিলাম ২০০৩ সালের শুরু থেকে। এক পর্যায়ে বিষয়টির ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে বই আকারে লেখতে সচেষ্ট হই।
‘তাকওয়া কুরআন মাজীদের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে তাকওয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। সকল নবী-রাসূল এ বিষয়ে সমসাময়িক যুগের লোকদের সতর্ক করেছেন এবং তাকওয়াভিত্তিক জীবন গড়তে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এটি এমন একটি বিষয়, যা সকল কল্যাণের সমষ্টি। একে বাদ দিয়ে কল্যাণের চিন্তাও করা যায় না। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আজো কুহেলিকার আবরণ রয়েছে, যা ভেদ করে সত্যিকারভাবে আল্লাহভীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
নিজের অজস্র অক্ষমতা নিয়ে কলম ধরেছি সেই মহান রবের উপর ভরসা করে, যিনি আলীমুল হাকীম, যাঁর উপর ভরসা করে আকাশের বুক চিরে পাখিরা উড়ে বেড়ায়।
বইটিতে তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, তাকওয়া ও মুত্তাকীদের পরিচয়, মুমিন জীবনে তাকওয়ার দাবি, ‘লিবাসুত তাকওয়া’র পরিচয়, ব্যক্তি ও সামষ্টিক জীবনে তাকওয়ার ফলাফল, তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি, তাকওয়ার পথে অন্তরায়,
তাকওয়া যাচাই করার উপায় এবং তাকওয়া না থাকার মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে বিশেষভাবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি, বইটি আমাদের তাকওয়া সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ এবং তাকওয়ার ব্যাপারে আমাদের সমাজে যেসব ভ্রান্তি ও কালো পর্দার আবরণ রয়েছে, তা ভেদ করে সত্যিকার তাকওয়ার পথে এগিয়ে যেতে আলোর ভূমিকা পালন করবে। বইটি পাঠে কেউ যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে আমার শ্রম সার্থক হবে। আর এ বইটি যেন
তাকওয়া ও মুত্তাকী
৬
আখিরাতের কঠিন দিবসে অধমের নাজাতের ওসিলা হয়, রাহমানুর রাহীম মহান আল্লাহর দরবারে এ মিনতি করছি।
বইটি লেখার ক্ষেত্রে যেসব গ্রন্থ থেকে সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে, আল্লাহ সেসব গ্রন্থের লেখকদের উত্তম বিনিময় দান করুন। আর যাঁরা বইটি লেখার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। বিশেষভাবে জনাব আবদুদ্দাইয়ান মুহাম্মদ ইউনুছ ও মাজহারুল হক ভাই, যাঁদের পরামর্শে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বইটিতে সংযোজন করা হয়েছে। বই প্রকাশের এ মুহূর্তে যাঁর কথা উল্লেখ না করলেই নয়, সে হলো আমার জীবনসঙ্গিনী ফিরোজা আক্তার পলি। হে আল্লাহ, আমাদের তাকওয়ার পথে, জান্নাতের পথে কায়েম রাখো। আর আমাদের জান্নাতে একে অপরের সাথী বানিয়ে দিও।
বইটিতে কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহীহ কথাগুলো লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও ভুল থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। হে আল্লাহ, তামাম ত্রুটি- বিচ্যুতি থেকে আপনার দরবারে ক্ষমাপ্রার্থী। কোনো পাঠকের নজরে ভুল পরিলক্ষিত হলে তা জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো এবং পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনের প্রয়াস পাবো, ইনশাআল্লাহ।
বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে যাঁরা যতটুকু সহযোগিতা করেছেন, আমি তাঁদের সকলের নিকট কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে দারুল হিকমাহ পাবলিকেশন্স লিমিটেড-এর কর্ণধার বন্ধুবর মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যিনি ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া শ্রদ্ধাস্পদ ডা. সাঈদুর রহমান চৌধুরী, যিনি প্রায়ই লেখালেখির খবর নিয়ে উৎসাহিত করেন।
জনাব আবু আহমদ নূরুজ্জামান, মোহাম্মদ শাহজাহান, মাওলানা ইলিয়াস, ফোরকান উদ্দিন, হারুনুর রশীদ, মঞ্জুরুল হক, শাব্বির আহমদ, নজরুল ইসলাম ভাই ও সুপ্রিয় নূরুল করিম, ড. মোঃ আবদুল কাদের, সরোয়ারসহ যাঁরা বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, আমি তাঁদের সকলের নিকট ঋণী। আল্লাহ সকলকেই জাযায়ে হাসানা দান করুন:
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ . رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ
يَقُوْمُ الْحِسَابُ
হে আমাদের রব, আমাদের কার্যক্রম কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সবকিছু শোনো এবং সব কিছু জানো। হে রব, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে ও মুমিনদেরকে হিসাবের কঠিন দিনে ক্ষমা করে দিও। আমীন!
তাকওয়া’ কুরআন মাজীদের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা। আমাদের ব্যক্তিগত
জীবনের সাথে তাকওয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। সকল নবী-রাসূল এ বিষয়ে সমসাময়িক যুগের
লোকদের সতর্ক করেছেন এবং তাকওয়াভিত্তিক জীবন গড়তে আহ্বান জানিয়েছিলেন ।
এটি এমন একটি বিষয়, যা সকল কল্যাণের সমষ্টি । একে বাদ দিয়ে কল্যাণের চিন্তাও করা যায় না।
অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আজো কুহেলিকার আবরণ রয়েছে ,
যা ভেদ করে সত্যিকারভাবে আল্লাহভীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার ।
এই বইটিতে তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, তাকওয়া ও মুত্তাকীদের পরিচয়, মুমিন
জীবনে তাকওয়ার দাবি, লিবাসুত তাকওয়া’র পরিচয়, ব্যক্তি ও সামষ্টিক জীবনে তাকওয়ার ফলাফল,
তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি, তাকওয়ার পথে অন্তরায়, তাকওয়া যাচাই করার উপায় এবং তাকওয়া না
থাকার মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে বিশেষভাবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আলোচনা তুলে ধরার
চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি,বইটি আমাদের তাকওয়া সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য
করবে ইনশাআল্লাহ এবং তাকওয়ার ব্যাপারে আমাদের সমাজে যেসব ভ্রান্তি ও কালো পর্দার আবরণ
রয়েছে , তা ভেদ করে সত্যিকার তাকওয়ার পথে এগিয়ে যেতে আলোর ভূমিকা পালন করবে।
বইটি পাঠে কেউ যদি সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে আমার শ্রম সার্থক হবে।
- Book: Taqwa & Muttaki
- Written by: Imam Delwar Hossain
- Author: Writer
- Publisher: Darul Hikmah Publications Ltd.
- First published: March 2006
- Pages: 232
- Cover: Hardcover
- ISBN: 978-984-8063-06-4
F.Q?
১. তাকওয়া কী?
তাকওয়া হলো আল্লাহকে ভয় করা এবং তাঁর আদেশ মেনে চলা। এটি এমন এক অবস্থান, যেখানে মানুষ তার প্রতিটি কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সচেতন থাকে।
২. তাকওয়ার গুরুত্ব কী?
তাকওয়া ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণ। এটি ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং মানুষকে পাপ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, “আল্লাহ মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন” (সূরা আল-বাকারা: ১৯৪)।
৩. তাকওয়া অর্জন করার উপায় কী?
তাকওয়া অর্জন করতে হলে আল্লাহর প্রতি ভক্তি ও ভয় বৃদ্ধি করতে হবে, কুরআন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে এবং প্রতিদিন আত্মশুদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
৪. মুত্তাকী কাকে বলা হয়?
মুত্তাকী হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহর আদেশ মেনে চলেন এবং পাপ কাজ থেকে দূরে থাকেন। তাদের জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়।
৫. তাকওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?
তাকওয়া মানুষের চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে এবং তাকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এটি কেবল আখিরাতের সফলতার জন্য নয়, বরং দুনিয়াতে শান্তি এবং ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপনের জন্যও অপরিহার্য।
৬. তাকওয়া কি কেবল ধর্মীয় বিষয়ে সীমাবদ্ধ?
না, তাকওয়া জীবনের প্রতিটি দিককে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি আচার-ব্যবহার, সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত জীবনসহ সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৭. কুরআনে তাকওয়া সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সম্মানিত সে, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুত্তাকী” (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)।
৮. তাকওয়া কীভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে?
তাকওয়া আমাদের পাপ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে, ভালো কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে, এবং আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় এবং ভালোবাসা সৃষ্টি করে।
৯. তাকওয়া অর্জনে কী কী বাধা হতে পারে?
তাকওয়া অর্জনে সবচেয়ে বড় বাধা হলো দুনিয়াবি লোভ, আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিলতি, এবং পাপাচারের প্রতি আসক্তি।
১০. তাকওয়ার উদাহরণ কী?
তাকওয়ার একটি সাধারণ উদাহরণ হলো, কেউ একা থাকলেও পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা, কারণ সে জানে আল্লাহ সবকিছু দেখছেন।
There are no reviews yet.