ভালো কাজের সুফল মন্দ কাজের কুফল
সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রভু মহান আল্লাহর, কে সৎকর্মপরায়ণ তা পরীক্ষার জন্য যিনি জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন। আর দরূদ ও সালাম নবী ও রাসূল মুহাম্মদ (স)-এর উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও সকল সাহাবীর উপর।
আমি যখন হাই স্কুল লেবেলের ছাত্র ছিলাম, তখন একটি বই প্রায়ই নজরে পড়তো। যা বাস-ট্রেনসহ বিভিন্ন জায়গায় হকাররা মানুষদের নিকট বিক্রি করতো এবং বিভিন্ন বুকস্টল, লাইব্রেরিতেও বইটি পাওয়া যেতো। তখনকার সময়ে অনেক মানুষই বইটির ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। আমি নিজেও। বইটির নাম ছিলো “কোন কাজ করিলে কি ফল হয়।” বইটিতে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে এমন অনেক বিষয় উপস্থাপিত হয়েছিলো যা পাঠকদের আগ্রহী করে তুলতো; কিন্তু এগুলো কতটুকু সঠিক, কুরআন- হাদীসসম্মত তার কোনো হদিস ছিলো না।
এক সময় আমার মনোজগতে চিন্তা আবির্ভূত হলো, এমন একটি বই রচনা করা যায় কিনা, যাতে কুরআন হাদীসের আলোকে ‘ভালো ও মন্দ কাজের সুফল-কুফল’ সম্পর্কে প্রশ্নোত্তর আকারে সাজানো থাকবে। যাতে পাঠকসমাজ সহজভাবে তার মনের কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের জবাবটি পেয়ে যান এবং সাথে সাথে কুরআন হাদীসের সাথে পরিচিত হতে পারেন। সেই চিন্তার আলোকেই বইটি রচনার কাজ শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ বিগত ডিসেম্বর ২০০৩ সালে বইটির প্রথম সংস্করণ কামিয়াব প্রকাশন বের করেন। বের হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে বইটি শেষ হয়ে যায়, এতে পাঠক সমাজের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। বইটি থেকে আমরা সবাই যেন আরো বেশি উপকৃত হতে পারি সেই টার্গেট নিয়ে বইটি আরো সুন্দর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, এতে আমরা কতটুকু সফল হতে পেরেছি পাঠক সমাজই এর ফায়সালা করবেন। বইটির প্রথমে ভালো ও মন্দ কাজের পরিচয় ও তা জানার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে একটি অধ্যায় সংযোজন করে দেওয়া হয়েছে। আর শেষ দিকে আরো দুটি অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে তা হলো: ১. জেনে রাখা ভালো ও ২. হাদীসের আলোকে চিকিৎসা। আশা করি পূর্বের তুলনায় বইটি আমাদের আরো বেশি উপকার দিবে ইনশাআল্লাহ।
বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে যাদের সহযোগিতা আমাকে উৎসাহিত করেছে আমি তাদের সকলের নিকট কৃতজ্ঞ। মহান রবের দরবারে এই প্রার্থনাই করবো “হে আল্লাহ! আপনি তাদের সবাইকে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ ও কামিয়াবী দান করুন।” বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দারুল হিকমাহ পাবলিকেশন্স লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন-এর প্রতি, যিনি বইটি প্রকাশের দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে দীনের পথে আরো বেশি কদম রাখার তৌফিক দিন।
সম্মানিত পাঠকমহলের নজরে কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে, আমাকে জানালে কৃতজ্ঞতাসহকারে গ্রহণ করা হবে। সেইসাথে আপনাদের দু’আ ও মূল্যবান পরামর্শও কামনা করছি, যা বইটিকে আরো সুন্দর ও যথাযথ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
হে রাব্বুল আলামীন! সম্মান, মর্যাদা ও কৃতিত্ব সবই তোমার। অক্ষমতা, অপারগতা, দুর্বলতা সবটুকুই আমার। হে মালিক! তুমি এ সামান্য খিদমতটুকু কবুল কর। আমাদের সকলকে তোমার রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দাও। আমাদেরকে হেফাজত কর, জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও। আর জান্নাতকে আমাদের স্থায়ী ঠিকানা বানিয়ে দাও। আমীন!
F.A.Q?
প্রশ্ন ১: ভালো কাজ বলতে ইসলাম কী বোঝায়?
উত্তর:
ইসলামে ভালো কাজ বলতে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী এবং রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে কাজ করা বোঝায়। যেমন, নামাজ পড়া, রোজা রাখা, দান-খয়রাত করা, অন্যের সঙ্গে সদাচরণ করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২: ভালো কাজের উদাহরণ কী কী?
উত্তর:
- মাতা-পিতার খেদমত করা
- অসহায়কে সাহায্য করা
- সত্য কথা বলা
- গরিব-দুঃখীদের দান করা
- অন্যকে ক্ষমা করা
- প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা
প্রশ্ন ৩: ভালো কাজ করলে কী পুরস্কার পাওয়া যায়?
উত্তর:
আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, যারা সৎ কাজ করে তাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। (সূরা বাকারা, ২৫)। দুনিয়াতে শান্তি ও আখিরাতে পুরস্কার লাভ ভালো কাজের ফল।
প্রশ্ন ১: মন্দ কাজ কী?
উত্তর:
মন্দ কাজ বলতে বোঝায় যেসব কাজ আল্লাহ হারাম করেছেন বা রাসূল (সা.) নিষেধ করেছেন। যেমন, মিথ্যা কথা বলা, চুরি করা, গীবত করা, অন্যকে কষ্ট দেওয়া ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২: মন্দ কাজের উদাহরণ কী কী?
উত্তর:
- মিথ্যা বলা
- পরনিন্দা বা গীবত করা
- সুদ খাওয়া
- অন্যের হক নষ্ট করা
- অহংকার করা
- নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকা
প্রশ্ন ৩: মন্দ কাজের শাস্তি কী?
উত্তর:
মন্দ কাজের জন্য দুনিয়াতে অপমান ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, “যে কেউ মন্দ কাজ করবে, তাকে তার শাস্তি ভোগ করতেই হবে।” (সূরা নিসা, ১২৩)
Visit Our Facebook Page: Facebook
There are no reviews yet.