ইসলামী সংগঠনে আনুগত্য পরামর্শ ইহতিসাব
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিহিল কারীম। ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন। মহান রাব্বুল আলামীন মুমিনদের সংঘবদ্ধ জীবনযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং
তাঁরই পথে সুশৃঙ্খলভাবে জিহাদ (সংগ্রাম) করাকে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার উপায় হিসেবে চিহ্নিত করে দিয়েছেন। আর শৃঙ্খলার মূল উপাদান হচ্ছে আনুগত্য। ইসলামী সংগঠন করা যেমনি ফরয, ইসলামী সংগঠনে নির্ভেজাল আনুগত্য করাও তেমনি ঈমানের অপরিহার্য দাবি। ঈমানের এ দাবি পূরণে অনেককে ব্যর্থ হতে দেখে কষ্ট অনুভব করছি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আল্লাহর মেহেরবানীতে ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠনে কাজ করার সুযোগে আনুগত্য প্রশ্নে অনেক জটিল সমস্যা অবলোকন করেছি এবং ঐ সমস্ত সমস্যা সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপও দেখার সুযোগ পেয়েছি। এ জাতীয় সমস্যার আবর্তে জড়িয়ে অনেক ত্যাগী কর্মী ভাইদেরও আন্দোলনের পথ থেকে ছিটকে পড়ে যেতে দেখে দারুণ মানসিক কষ্ট পেয়ে ‘আনুগত্য পরামর্শ ইহতিসাব’ এ বিষয়ে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি। ‘৯৯ সালে আমেরিকা যাওয়ার পর ২০০০ সালে ‘মুসলিম উম্মাহ অফ নর্থ আমেরিকা’র যুবক ভাইদের নিয়ে একটি স্টাডি সার্কেল পরিচালনা করার সুযোগ পাই। এ স্টাডি সার্কেলে ৩/৪টি অধিবেশনে উক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেখান থেকেই এ বিষয়ে পয়েন্টভিত্তিক একটি নাতিদীর্ঘ আলোচনা তৈরি হয়ে যায়। তার কপিটি বাংলাদেশের ইসলামী সংগঠনের উঁচু মাপের দায়িত্বশীল, সংগঠক ও লেখক জনাব অধ্যাপক নাজির আহমদ এবং ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব আবু নাছের মোঃ আবদুজ জাহেরকে প্রদান করি। অধ্যাপক নাজির সাহেব এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে লেখার পরামর্শ প্রদান করেন এরপরে ‘মুসলিম উম্মাহ অফ নর্থ আমেরিকা’র উম্মাহ ম্যাগাজিনে দু’দফায় ইসলামী সংগঠনে আনুগত্য ও পরামর্শ বিষয়টি ছাপা হয়। এভাবেই বিষয়টি বই আকারে প্রকাশের পথে এগিয়ে আসে। আজ তা বই আকারে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া। রাব্বানা লাকাল হাম্দ, হামদান কাছীরান তায়্যিবান মুবারাকান ফীহি।
বইটি লেখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বশীল ভাইদের পক্ষ থেকে আলোচনা, পরামর্শ ও সাংগঠনিক জীবনে আনুগত্য পরামর্শ ইহতিসাব প্রশ্নে নানা রকম সমস্যা এবং উক্ত বিষয়ে আন্দোলনের ভাইদের অসংখ্য প্রশ্ন, আপত্তি, অভিযোগ সামনে রাখা হয়। এ সমস্যাগুলো কুরআন-হাদীসের আলোকে আলোচনা পর্যালোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। যাতে করে শয়তানের চক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে দীন কায়েমের পথে ভাই ও বোনেরা সক্রিয় থাকতে পারেন। বইটি লেখার ক্ষেত্রে যাদের পরামর্শ ও দু’আ সাহস যুগিয়েছে, আমি তাদের সকলকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। লেখালেখির বিভিন্ন সময়ে আরো যারা উৎসাহ দিয়েছেন তাদের মধ্যে Muslim Ummah of North America -এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সাঈদুর রহমান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবু আহমদ নূরুজ্জামান, ফয়সাল ভাই, মাহতাবউদ্দিন ভাই, আনোয়ারুল হক ভাই, মীর মাসুম আলী ভাই, শিবলী ভাই, আফতাব মান্নান ভাই, মাহবুব ভাই, হাফেয মোশাররফ হোসাইন, মাঈনউদ্দিন, শাব্বির আহমদ ও আকরামুল হক ভাই এবং মাজহার ভাই অন্যতম। মনিরুল ইসলাম ভাই, সাইফুল, মমিন, শরীফ, আহসান, নূরুল করিম, সবুজ, আবদুল কাদের, আদনান, আবরার, আবদুল হালিম প্রমুখের সহযোগিতাও মনে রাখার মতো। আমার জীবনসঙ্গিণী ফিরোজা আক্তার পলির সার্বিক সহযোগিতা অনেক কঠিন কাজ সহজ করে দিয়েছে। হে আল্লাহ, তুমি তাদের উত্তম প্রতিদান দান কর।
বিশেষ করে বইটি রচনার ক্ষেত্রে যেসব ইসলামী চিন্তাবিদের রেফারেন্স নেয়া হয়েছে, তাদের সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং তাদের সবার জন্য মহান রবের নিকট উত্তম প্রতিদান কামনা করছি।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি দারুল হিকমাহ পাবলিকেশন্স লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন-এর প্রতি, যিনি অকৃত্রিম ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বইটি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ সবাইকে তাঁরই পথে আরো ভূমিকা পালন করার তৌফিক দিন।
লেখক হিসেবে আমি নবীন। কোন ত্রুটি পাঠক মহলে পরিলক্ষিত হলে আমাকে জানালে বাধিত হব। ঈমানের দাবি পূরণার্থে যারা ইসলামী সংগঠনে সম্পৃক্ত হয়েছেন, আনুগত্যের সঠিক Spirit নিয়ে দীন কায়েমের জন্য আজীবনের সংকল্প গ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য এ বইটি যদি সামান্য অবদান রাখতেও সক্ষম হয়, তাহলে আমার শ্রম সার্থক হবে।
হে মহান রব! সম্মান, মর্যাদা ও কৃতিত্বের সবটুকুই আপনার। আমি দুর্বল, আমি অক্ষম। হে বিশ্বজাহানের মালিক। আপনি এ সামান্য খিদমত কবুল করুন। আমাদের সবাইকে জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে মুক্তি দিন। জান্নাতকে আমাদের স্থায়ী আবাসস্থল বানিয়ে দিন। আমীন।
F.Q?
- ইসলামী সংগঠনে আনুগত্য কী?
- ইসলামী সংগঠনে আনুগত্য হলো নেতৃত্বের প্রতি সম্মান এবং সংগঠনের নিয়ম-কানুন মেনে চলা। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক।
- পরামর্শের গুরুত্ব কী?
- পরামর্শ ইসলামী সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি নেতৃত্ব এবং সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। পরামর্শের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করা যায়।
- ইহতিসাব কী?
- ইহতিসাব হলো সংগঠনের সদস্যদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন করার প্রক্রিয়া। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক।
- ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্বের ভূমিকা কী?
- ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্বের ভূমিকা হলো সংগঠনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা, সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা।
- সংগঠনের সদস্যদের জন্য পরামর্শ গ্রহণের পদ্ধতি কী?
- পরামর্শ গ্রহণের পদ্ধতি হলো সদস্যদের মতামত এবং পরামর্শ শোনা, তাদের সাথে আলোচনা করা এবং যৌথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এটি সংগঠনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
- ইহতিসাবের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রম কিভাবে মূল্যায়ন করা যায়?
- ইহতিসাবের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রম মূল্যায়ন করা যায় সদস্যদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে, তাদের কাজের মান নির্ধারণ করে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এবং উন্নতি করার মাধ্যমে।
Visit Our Facebook Page: Facebook
There are no reviews yet.